মনোরথ
কোন অদেখায় একা ঘুরপাক খাও
প্রতিরুপের আলেখ্য এঁকে যায় কারা?
মর্তের অপাঠ্যে তুমি আমাকে নাচাও
দেহের ভেতর রাত, আমি রাতচোরা—
দু'ধারে রেখেছি মন, মাঝে কি মিনার?
তোমার দেহের মিথ গোকুলের মেদ
করতোয়া চোখে আজ জেগেছে তিমির
অকথ্য ভাষায় কেউ করছে প্রমোদ—
তবু দূর ইতিহাসে বাজে রে সরোদ
সরোদের মাঝে দু'টি পাখিকে উড়াই
সমস্ত কথারা যেন প্রেমের প্রবাদ
নৃত্যের বিপাকে মন রুমি হয়ে যায়!
দেহের অধিক যদি দেহাতীত হয়
ছলনা গভীরে করো দেহ বিনিময়—
ধারা
দাবদাহ জেঁকে বসেছে এ মেদ শরীরের ভাঁড়ে
ঝিমধরা বকের মতন, তবু আমি অসতর্ক
লিকলিকে জলের প্রবাহে তুমি মীন হয়ে আছো—
অনিশ্চয়তার খেয়া ধরে— ধীর বইছে সময়...
পেঁপেগাছের মতন বিপদসংকুল মনোরথ
উঁকি দেয়, ও-কার উঠানে? —আর তুমি ছন্নছাড়া
ঝড়ের বাতাস হয়ে বয়ে যাও আমার মাস্তুলে
মহীয়সী চিত্তের বিরাগ দেখে ভয় হয় প্রাণে!
আতাফলের সৌরভ রাখি, থির আহত হৃদয়—
প্রকম্পের আহুতি রেখেছি বৃক্ষের নিকটে এসে।
ফুলেদের রূপ ফুটে থাকে তোমার ব্রোণের দাগে
মহৎ সকল উপাদেয় খুলে বসেছো কী দেহে!
দারুণের দাহক শরীরী, নও জাগন্ত মাজার
কেনো বিশ্বাসীর মতো আমি সিজদায় লুটে যাই!
মানুষের মনে
শুধু মনে হয় আজ জীবনের স্বাদ হারিয়েছি
অলক্ষ্যে তোমার ঘ্রাণ মর্মে এসে লাগে সুগভীর—
বেদনার শ্বাস, দীর্ঘ মিথ হয় অপ্রতুল প্রাণে।
আর তুমিও কী খোলাচুলে ব্যাপ্ত নও প্রিয়তমা!
মেহগনি ফলের মতন ফেটে গিয়েছি ভীষণ—
হতাশা, প্রলাপ ঘুরে ঘুরে পাক খায়, ঝরে যায়...
সোনালি বীজের মতো মাটিগর্ভে জলের আস্বাদে
পুনরায় জাগবে কি উর্ধমুখী আকাশের গায়ে?
কামনার অভিঘাত নিয়ে অতিদূরে উদয়মান, যে—
আলোর বিরুদ্ধে ছায়া ব্যাকুল রয়েছে স্থিতিশীল
নিটোল সে অন্তরায় মিশে থাকে সকলের মনে!
প্রণয়ে, প্রেক্ষিতে স্বাদুজল পায় ঘ্রাণপ্রবণতা—
চোখ বলে— অমোঘ বিস্ময়ে তুমি রবে না যখন
তখনো কী কাম, দুঃখ ঘনীভূত হবে দেহ-মনে?
0 Comments