দ্বিতীয় মৃতুর আগে
গভীর অন্ধকারে চাঁদ ডুবে গেছে
রাতের মধু পূর্ণিমায়।
এই শহর, এই গ্রাম অন্ধকারের চুম্বনে
জেঁগে আছে, ভেসে আছে- দূর লোকালয়ে;
রাত্রিপারাপারে দূরে যে হেঁটেছে ভোরের অপেক্ষায়
তার দু’ধারে সারি সারি কবর, বুকের পাজরে ভয়
তবু সে নিমগ্রন রয় নক্ষত্রের পানে
কতশতো কীট নগ্নশিরে বাসা বাধে
ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায় পাঁজরের সব হার
ধূলি বিস্তৃত আঁধারে মিশে যায় সব
দেহখানা ধূলির নিঃশ্বাস হয়ে রয়।
* * * * *
ধূলির হৃদয় ঢেউ তোলে- মানুষেরে পূর্ণ জন্ম দেওয়ার
অই মানুষ, মানুষের ভিড়ে জেগে উঠে
তার হৃদয় চমকে যায়-
এই শাশ্বত পৃথিবীতে কেবল মানুষ শাশ্বত নয়
‘হায় মানুষ! তবু তুমি ক্ষণে-ক্ষণে
মেঘ ও রোদের খেলার মতো ভেঙ্গে দাও মানুষের হৃদয়’।
পৃথিবীকে স্তব্ধ করে আমিও একবার মরে দেখেছি-
ধূলার আঁধারে হারিয়ে যেতে যেতে- মৃত্যুর বিষ্ময় বুঝেছি;
মৃত্যু কিভাবে করুন হৃদয়ে ছুড়ে ফেলে
মানুষের মন থেকে কিভাবে হারিয়ে নিঃশেষ করে দেয়।
তাই আজ, যত পথ- যত রথ আমার থেমেছে সত্যের বন্দরে
হৃদয় উচিয়ে ধরেছি- মানুষের কল্যাণে
গভীর আনন্দে গেয়েছি সাম্যের গান
বুকে নিয়ে শান্তির ঝড়- ছড়ায়েছি ঐক্যের তান
কিছুতেই মিথ্যা নয়, সত্য সবে করে আরেক জীবন পার
চেয়ে দেখি এখন-
চেতনার তাপ রৌদ্রের মতোন
পৃথিবীর বুকে উত্তাপ ছড়ায়
আঁধার ভেঙ্গে পূর্ণিমার চাঁদ জেঁগে উঠে
এই শহর, এই গ্রাম আলোর চুম্বনে
ময়ুরের ডানায় উড়ে ভেসে যায়
লোকালয় থেকে লোকান্তরে।
আরো দেখি-
কি বিস্ময়ে মানুষ বেঁচে থাকে মৃত্যুকে করে আলিঙ্গন।
জীবিকার হাতে বন্দি জীবন
শুকনো পাতার স্তুপ আর একটি শালিক পাখি
ভোরের হাওয়ায় স্বস্থির নিঃশ্বাস নেয়-
একটি নতুন দিন উপহার পেলো বলে;
কিন্তু, মধ্য দুপুরে শুকনো পাতার স্তুপ উনুনে জ্বলে
সে আগুনে শিকারীর উল্লাস হয়ে শালিক পাখি ঝলসে যায়।
কি অদ্ভুত জীবনযাত্রা!
একজনের জীবন অন্য জনের জীবিকার হাতে বন্দি।
পৃথিবীর কোন কিছুই অশেষ নয়
দিন ও রাতের পার্থক্য কোথায়, জানেন?
দিন যাপিত-নিঃশেষের
রাত পরাভূত-অর্জনের
তাই কেবল,
উদ্যাপন মানেই অর্জন নয়
পরাভূত মানেই নিঃশেষ নয়
অর্জনের মধ্যে সম্পাতি থাকে
নিঃশেষের মধ্যে থাকে শুরু,
শুরু মানে আশা
যে আশাতে মানুষ বাঁচে
তাই, অর্জন বা নিঃশেষ কোনটাই অশেষ নয়।
0 Comments