Advertisement

উন্মেষ

বইকে ছাপিয়ে যেন বাণিজ্য বড় না হয়ে ওঠে: শফিক হাসান


শফিক হাসান একজন গল্পকার ও রম্য লেখক। লেখাজোখার প্রতি আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। প্রথম লেখা ছাপা হয় মাসিক রহস্যপত্রিকায়। তার লেখা প্রকাশিত হতে থাকে দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিকসহ অজস্র পত্রপত্রিকায়। সমানতালে লিখেছেন লিটল ম্যাগাজিনেও।

দীর্ঘদিন যাবত সম্পাদনা করছেন পাঠকপ্রিয় লিটল ম্যাগাজিন ‘প্রকাশ’। সিরিয়াস লেখার পাশাপাশি রম্য ধাঁচের রচনায়ও মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। মাসিক উন্মাদ অতঃপর দৈনিক প্রথম আলোর আলপিন-এর মাধ্যমে রম্যচর্চার হাতেখড়ি। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন পান্ডুলিপি সম্পাদনা, লেখালেখি এবং সাংবাদিকতাকে। বর্তমানে একটি জাতীয় দৈনিকে সাব এডিটর হিসেবে কর্মরত। শফিক হাসানেরর প্রকাশিত মোট বই ২১টি।

বইমেলা লেখালেখি নিয়ে শফিক হাসান কথা বলেছেন উন্মেষ সাহিত্য সাময়িকীর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাজেদুর আবেদীন শান্ত-

পাঠকদের জন্য বইমেলায় আপনার কি কি বই থাকছে?

শফিক হাসান: আমার চারটি বই এসেছে এবারের বইমেলায়। রম্যরচনা ‘ফরমালিনের রাজ্যে ফল চিরঞ্জীব’ এনেছে চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন, রম্যগল্প ‘অটোগ্রাফের ফাঁদে’ এনেছে টাঙ্গন, দেশ পাবলিকেশন্স থেকে এসেছে কবিতার বই ‘ঘুমের বাদ্যে রাষ্ট্র নাচে', ছোটদের সময় এনেছে শিশুতোষ গল্পের বই ‘মানুষও উড়বে আকাশে’। আরও একটি বই প্রকাশিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। প্রকাশিত হলেই নাম বলব!

বইমেলায় কি গিয়েছেন? বইমেলার পরিবেশ কেমন লাগছে?

শফিক হাসান: এবার বইমেলার স্টলবিন্যাস একদমই ভালো হয়নি। কেমন যেন দম বন্ধ করা পরিস্থিতি। শিশুচত্বর ও লিটল ম্যাগাজিন স্টলগুলো রাখা হয়েছে বইমেলার দুইপ্রান্তে। ডান-বাম করে। বরাবরের মতো এবারও লিটল ম্যাগাজিন অবহেলিত থেকেছে। বাংলা একাডেমি স্টলের ব্যানার বানিয়ে দেবে বললেও শেষপর্যন্ত দেয়নি। স্টল বরাদ্দও দিয়েছে অনেক দেরিতে।

লিটল ম্যাগাজিনই সাহিত্যের প্রাণ লিটল ম্যাগাজিন চত্বর মেলার মাঝখানে রেখেই বইমেলার স্টলবিন্যাস করা উচিত। হরেদরে প্যাভিলিয়ন বরাদ্দও কাম্য নয়। বইকে ছাপিয়ে যেন বাণিজ্য বড় না হয়ে ওঠে। বইমেলা আরও গোছানো হওয়া বাঞ্ছনীয়।

বইমেলা থেকে কী ধরনের বই সংগ্রহ করলেন এবার?

শফিক হাসান: প্রতি বছরই অনেক বই কেনার থাকে। কিন্তু বাজেট স্বল্পতার কারণে শেষ পর্যন্ত পছন্দের সব বই কেনা হয়ে ওঠে না। বন্ধুদের বেশ কিছু বই কিনেছি ইতোমধ্যে। সালেহা চৌধুরীর মুনশী আবদুল হাকিমের কোট ও অন্যান্য গল্প, তাঁর অনূদিত বই লাস্ট ফর লাইফ, ইমরুল কায়েসের জলমাতাল, মাইনুল এইচ সিরাজীর অপার পুরুষ, সৈয়দ আহসান কবীরের আগুনঝরা জল, কামরুন নাহারের প্রেমপত্র, রায়হান উল্লাহর মায়াপথিক, রহিম ইবনে বাহাজের দিন যাপনের গ্লানি, হোমায়রা মোর্শেদা আখতারের এক যে ছিল সত্যি ভূত, শাহরিয়ার মাসুমের ঘুম থেকে উঠে দেখি কচ্ছপ হয়ে গেছি, নেয়ামুল হকের রাজকুমারি ও সাতরঙা পাখি-সহ বেশ কয়েকটি বই। ধীরে ধীরে আরও বই সংগ্রহ করব।

আগের বইমেলা থেকে কি কোনো পার্থক্য লক্ষ্য করেছেন?

শফিক হাসান: স্টলবিন্যাসের কথা বাদ দিলে এবারের বইমেলা সব দিক দিয়ে ভালো। সাধারণ মানুষ আগে শুধু ঘুরতে আসছেন, এবার অনেকেই বইও কিনছেন। এটা ভালো দিক। খাবারের দোকান পেছনের অংশে দেওয়া হয়েছে। এটাও ভালো। তবে খাবারের মূল্যে নিয়ন্ত্রণ আনা যায়নি। আমা কফির দামও এবার বাড়ানো হয়েছে। ওয়াশরুম ব্যবহারে জটিলতা প্রকট। জুতা খুলে স্যান্ডেল পরতে হয়। এসব জটিলতা দূর করা উচিত। বইয়ের দাম একটু বেড়েছে, সেটাই স্বাভাবিক।

বইমেলায় আগত পাঠকদের উদ্দেশ্যে কী বলতে চান?

শফিক হাসান: পুরনো কথাটিই বলতে চাই। বইমেলায় যারা আসেন, সবাই অন্তত একটি করে যদি বই কেনেন, মেলার মাঠে ঘাসও থাকবে না। কিন্তু আমাদের পড়ার ইচ্ছা কম, কেনার ইচ্ছা আরও কম। বই বিক্রি হলে প্রকাশক বাঁচে, লেখক বাঁচে, দেশও বাঁচে। বই বিক্রি না হলে সব দিকেই অন্ধকার! সবাই যেন অন্তত একটি বই কেনের এমন আহ্বান জানাতে চাই। (যদিও জানি, অরণ্যে রোদন)!

Post a Comment

0 Comments