সালাহ উদ্দিন মাহমুদ একজন কবি, কথাসাহিত্যিক ও গবেষক। তিনি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার উত্তর উড়ার চর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকসহ প্রথম শ্রেণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ড. রাজিব মণ্ডলের অধীনে এমফিল গবেষণা করছেন।
২০০৭ সালে দৈনিক দেশবাংলার মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন। বর্তমানে অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে ফিচার ইনচার্জ পদে কর্মরত।
তিনি সুনীল সাহিত্য পুরস্কার, কালকিনি প্রেসক্লাব সম্মাননা, কালকিনি কলেজ বাংলা বিভাগ সম্মাননা, এসইএল লেখক সম্মাননা, লেখকবাড়ি পুরস্কার, রকমারি সংবাদ স্টার অ্যাওয়ার্ড, এসবিএসপি লেখক সম্মাননা, আবুল মনসুর আহমদ প্রবন্ধ পুরস্কার, সাহিত্য দিগন্ত লেখক পুরস্কার, আমার বঙ্গবন্ধু লেখক সম্মাননা এবং ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিল লেখক সম্মাননা লাভ করেন।
তার গল্পের বই ‘সার্কাসসুন্দরী’, ‘নিশিসুন্দরী’, ‘সুন্দরী সমগ্র’ ও ‘এখানে কয়েকটি জীবন’। কবিতার বই ‘মিথিলার জন্য কাব্য’ ও ‘তুমি চাইলে’। সাক্ষাৎকার সংকলন ‘আমার আমি’ ও সচেতনতামূলক বই ‘অগ্নিকাণ্ড সতর্কতা ও নির্বাপণ কৌশল’। তার উপন্যাস ‘মমতা’। প্রবন্ধগ্রন্থ ‘বাংলা সাহিত্যের একাল-সেকাল’। কিশোরদের উপযোগী বই ‘হাজী মহম্মদ মহসীন’।
বইমেলা ও লেখালেখি নিয়ে সালাহ উদ্দিন মাহমুদ কথা বলেছেন উন্মেষ সাহিত্য সাময়িকীর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাজেদুর আবেদীন শান্ত-
পাঠকদের জন্য বইমেলায় আপনার কি কি বই থাকছে?
সালাহ উদ্দিন মাহমুদ: এবারের বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের নাম ‘বাংলা সাহিত্যের একাল-সেকাল’। দশটি প্রবন্ধ নিয়ে সাজানো হয়েছে বইটি। প্রকাশ করেছে কিংবদন্তী পাবলিকেশন। প্রচ্ছদ করেছেন চারু পিন্টু। মূল্য রাখা হয়েছে ৩০০ টাকা। পাওয়া যাবে বইমেলার ৩৭৪-৩৭৫ নম্বর স্টলে। বইটিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, হুমায়ূন আহমেদ, সেলিনা হোসেন, ফারুক মাহমুদ, কামাল চৌধুী, তপন বাগচী ও আমিনুল ইসলামের সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
বইমেলায় কি গিয়েছেন? বইমেলার পরিবেশ কেমন লাগছে?
সালাহ উদ্দিন মাহমুদ: ভালো লেগেছে। তবে পরিসর মনে হয় কমেছে। আগের চেয়ে প্রবেশপথও কমেছে। ফলে মৎস্য ভবন হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের পাশের গেট দিয়ে প্রবেশ করতে পারছি না। সময় নষ্ট হচ্ছে। ধুলার পরিমাণ বেশি মনে হচ্ছে। তারপরও বইমেলা যদি জমে ওঠে। বই বিক্রির পরিমাণ বাড়ে। তাহলে অনেক খুশি হবো।
বইমেলা থেকে কী ধরনের বই সংগ্রহ করলেন এবার?
সালাহ উদ্দিন মাহমুদ: মাত্র দুদিন গিয়েছি। তাতে গবেষণা ও প্রবন্ধ বিষয়ক বই কিনেছি। যেহেতু বর্তমানে গবেষণা করছি। সামনের দিনে গেলে কিছু প্রিয়জনের বইও কিনবো। তবে সেটি লেখককে না জানিয়ে। জানিয়ে কিনতে গেলে তিনি বিব্রত হতে পারেন। কারণ মেলায় আমারও বই আছে। লজ্জায় পড়ে হলেও আমার বই কিনতে আসতে পারেন।
আগের বইমেলা থেকে কি কোনো পার্থক্য লক্ষ্য করেছেন?
সালাহ উদ্দিন মাহমুদ: পার্থক্য বলতে বইয়ের দাম বেশি এখন। লেখকের সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে তারকা লেখকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। আমি চাইবো, তারা নিয়মিত লিখবেন। শুধু শখের বশে নয়। দায়বোধের জায়গা থেকে লিখবেন। এছাড়া একটা বিষয় লক্ষ্য করেছি, বাহারি ধরনের স্টল আর প্যাভিলিয়ন। প্রকাশকরা কেন এত টাকা খরচ করে স্টল নির্মাণ করেন? সে বিষয়টি ভাবছি। স্টলের পেছনে এত লগ্নি না করলেও পারেন। তার চেয়ে বরং বই, লেখক ও লেখার মানের দিকে নজর দেওয়া উচিত। অস্থায়ী একটি স্টলের জন্য হাজার হাজার টাকা ব্যয় করা যুক্তিসঙ্গত নয়।
বইমেলায় আগত পাঠকদের উদ্দেশ্যে কী বলতে চান?
সালাহ উদ্দিন মাহমুদ: পাঠক সব সময়ই পাঠক। বইমেলায় না এলেও পাঠক। এখন ঘরে বসেই বই কেনা যায়। কষ্ট করে প্রতিদিন মেলায় আসার যৌক্তিকতা নেই। একদিন শুধু আড্ডা দিতে এবং কিছু বই কিনতে আসা উচিত। যানজট আর দ্রব্যমূল্যের বাজারে বারবার আসা বিলাসিতা মনে হয়। পছন্দের বইগুলো অনলাইন প্ল্যাটফর্মেই সংগ্রহ করা উচিত। আমি যেমন প্রতিমাসেই বই কিনি। তাই বইমেলাকে বই কেনার আলাদা উপলক্ষ্য মনে হয় না। পাঠক যেন বই পড়েন, বই কেনেন; সে বিষয়ে লেখককে সজাগ থাকতে হবে। প্রিয় পাঠক লেখককে ভালোবাসুন। তার বই পড়ুন।
0 Comments