ছোটবেলা থেকেই আমরা পাঠাগার বা গ্রন্থাগারের সঙ্গে কম-বেশি পরিচিত। এই গ্রন্থাগার বা প্রকৃত অর্থে ‘পাঠাগার’ হলো বই, পুস্তিকা ও অন্যান্য তথ্য সামগ্রীর একটি সংগ্রহশালা, যেখানে পাঠকের প্রবেশাধিকার থাকে এবং পাঠক সেখানে পাঠ, গবেষণা কিংবা তথ্যানুসন্ধান করতে পারেন। বাংলা ‘গ্রন্থাগার’শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ করলে গ্রন্থ+আগার এবং ‘পাঠাগার’শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ করলে পাঠ+আগার পাওয়া যায়। অর্থাৎ গ্রন্থসজ্জিত পাঠ করার আগার বা স্থান হলো গ্রন্থাগার। (অভিধান ও ব্যাকরণ)-
গ্রন্থাগারের ইতিহাসের শুরু ২৬০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে, প্রাগৈতিহাসিক থেকে ঐতিহাসিক যুগের সন্ধিক্ষণে। তক্ষশীলা ও নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীব সমৃদ্ধ গ্রন্থাগারের অস্তিত্ব মিলেছে। গ্রন্থাগারের মূল লক্ষ্য থাকে কতগুলো। যেমন:
ক. তথ্যসংশ্লিষ্ট উপাদান সংগ্রহ
খ. সংরক্ষণ
গ. সংগঠন
ঘ. সমন্বয় এবং
ঙ. পাঠকের জন্য তা উন্মুক্ত করা।
তাই সাধারণ সব জনগণের জন্য উন্মুক্ত গ্রন্থাগারকে গণগ্রন্থাগার বা গণপাঠাগার বলা হয়। স্বাভাবিকভাবে এ ধরনের গ্রন্থাগার অন্যান্য সব গ্রন্থাগার থেকে আকার এবং সংগ্রহের দিক দিয়ে যথেষ্ট বড় হয়ে থাকে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় আছে এমন একটি গণগ্রন্থাগার, যা ‘পাবলিক লাইব্রেরি’ নামে বহুল পরিচিত। এছাড়াও অনেক গণপাঠাগার রয়েছে, যা হয়তো আমাদের দৃষ্টি ও জ্ঞানের বাইরে।
সুতরাং জেনে রাখা ভালো, ‘‘বাংলা অঞ্চলে গণপাঠাগার গড়ে তোলার পথিকৃৎ রাজনারায়ণ বসু। তিনি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ১৮৫১ সালে তিনি মেদিনীপুরে একটি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন। পরে, তাঁর স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে মেদিনীপুর পাবলিক লাইব্রেরির নাম রাখা হয় ‘রাজনারায়ণ বসু স্মৃতি পাবলিক লাইব্রেরি’। (ঢাকার গণপাঠাগার: আলোয় ভরা ভুবন, পৃষ্ঠা ২৮)
যদিও আমাদের আলোচনার বিষয় ‘ঢাকার গণপাঠাগার’। কেননা ঢাকার কিছু গণপাঠাগার নিয়ে গবেষণাধর্মী মহৎ কাজটি করেছেন লেখক ও সাংবাদিক কাজী আলিম-উজ-জামান। বলতে গেলে, স্বপ্রণোদিত হয়ে কাজগুলো করেছেন তিনি। তবে সাহায্য নিয়েছেন পেশাগত প্রতিষ্ঠানের। পেশাদার সাংবাদিক আলিম-উজ-জামান তার কর্মস্থলের বিশাল অুনপ্রেরণা পেয়েছেন বলে মুখবন্ধেই স্বীকার করেছেন।
কাজী আলিম-উজ-জামানের জন্ম ১৯৭৮ সালের ৮ জানুয়ারি। তিনি বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। লেখাপড়া করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। এমনকি সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত আছেন দুই দশকেরও বেশি সময়। এর মধ্যে বিগত দেড় দশক কেটেছে দেশের প্রধান দৈনিক প্রথম আলোয়। এখন তিনি পত্রিকাটির ‘সহকারী বার্তা সম্পাদক’। সাংবাদিকতার পাশাপাশি কবিতা ও গল্প লেখেন তিনি। এছাড়া আগ্রহ আছে বিচিত্র বিষয়ে, বিশেষত গবেষণায়। ফলে ২০১৬ সালের জুন মাস থেকে প্রথম আলোয় লিখেছেন ধারাবাহিক প্রতিবেদন ‘ঢাকার পাঠাগার’। সেসব প্রতিবেদন একসময় আশ্রয় নিয়েছে মলাটের মধ্যে। তাই আমরা পেয়েছি ‘ঢাকার গণপাঠাগার: আলোয় ভরা ভুবন’। তার কাজের সঙ্গে জীবনের একটি যোগসূত্র আছে বলেই ব্যক্তি আলিম-উজ-জামান সম্পর্কে একটু জানিয়ে নিলাম।
তার লেখা বইটিতে বর্ণনা করা হয়েছে ঢাকার চল্লিশটি বেসরকারি গণপাঠাগার প্রতিষ্ঠার নানা অজানা অধ্যায়। রয়েছে পাঠাগারগুলো টিকে থাকার অন্তহীন লড়াইয়ের কথা। বলা হয়ে থাকে, প্রতি বর্গকিলোমিটারের মধ্যে একটি গণপাঠাগার থাকা জরুরি। সে হিসেবে কম করে হলেও এ দেশে ৫০ হাজার পাঠাগার থাকার কথা। তবে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের হিসাবে বেসরকারি পাঠাগারের সংখ্যা ১৬শর মতো হবে।
২০১৬ সালের জুন থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত টানা ১০ মাস কাজ করেছেন লেখক। তিনি খুঁজতে থাকেন কোথায় আছে একটি ভালো পাঠাগার। কী কী বই আছে তাতে? এর পাঠক কারা, কেমন তারা? এসব জানার ও বোঝার চেষ্টা করেছেন। সব মিলিয়ে তিনি ঢাকার ৪০টি পাঠাগার নিয়ে কাজটি করেন। তা প্রতি শনিবার দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়। ভূমিকায় লেখক বলছেন, ‘কোনো কোনো পাঠাগারে গিয়ে যেমন মুগ্ধ হয়েছি, তেমনই কোথাও কোথাও গিয়ে দুঃখ পেয়েছি। হতশ্রী দশা মেনে নিতে পারিনি। কোথাও দু’কথা শুনিয়ে দিয়ে এসেছি।’
যতই পাতা উল্টাই; ততই তার এমন আবেগক্ষুব্ধ কথার কারণ খুঁজে পাই। কেননা তার কাজের ধরন বইয়ের সূচিপত্র দেখলেই অনুমান করা যায়। যেমন:
১. ভূমিকা : যেভাবে লেখা হলো ঢাকার গণপাঠাগার: আলোয় ভরা ভুবন
২. বাংলাদেশে পাঠাগার : ইতিহাসের হাত ধরে
৩. ঢাকায় পাঠাগার চর্চা
৪. পাঠাগারের পৃষ্ঠপোষকতায়
পিছিয়ে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র
৫. আজিমপুর এস্টেট জনকল্যাণ সমিতি পাঠাগার : পাঠক নেই, বই পোকায় কাটে
৬. হারিয়ে যাওয়া নর্থব্রুক হল লাইব্রেরি
৭. সিদ্ধেশ্বরীর অন্বেষা পাঠাগার : নারীদের উৎসাহে গড়ে ওঠে যে পাঠাগার
৮. দনিয়ার আরজ আলী মাতুব্বর পাঠাগার : একটি পাঠাগার বন্ধের টুকরো গল্প
৯. আশেক স্মৃতি পাঠাগার : একজন বাবার উদ্যোগ
১০. এশিয়াটিক সোসাইটি লাইব্রেরি : নেতৃত্ব দিচ্ছে কই?
১১. লালবাগের আজাদ মুসলিম পাবলিক লাইব্রেরি : একটি পাঠাগারের ইতিকথা
১২. বেরাইদ গণপাঠাগার : শহরতলীর গর্ব
১৩. বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র : জেগে ওঠার অবারিত পৃথিবী
১৪. বুড়িগঙ্গা গণপাঠাগার : বুড়িগঙ্গা পাড়ে চেতনার বিপ্লব
১৫. দনিয়া পাঠাগার : নীড় ছোট, আকাশ তো বড়
১৬. ঢাকা কেন্দ্র : থরে থরে সাজানো ইতিহাস
১৭. এনায়েত কবীরের তথ্যের জগৎ : পাঠাগারের চেয়ে বড় কিছু
১৮. লালবাগের গ্রন্থবিতান : হারানো দিনের গল্প
১৯. জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক বিদ্যাপীঠ : লেখক-গবেষকদের জন্য স্বর্ণখনি
২০. খিলগাঁওয়ের ইসলামি পাঠাগার : রুচিস্নিগ্ধ, মনোরম পরিবেশ
২১. ইসলামিক ফাউন্ডেশন লাইব্রেরি : ১৭ হাজার বই খোয়া
২২. জাগরণী পাঠাগার, কামরাঙ্গীরচর : যে পাঠাগারের সাথে কবি নির্মলেন্দু
গুণ
২৩. জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র পাঠাগার : পাঠাগার চালান পরিচ্ছন্নতাকর্মী!
২৪. গেন্ডারিয়ার কামাল স্মৃতি পাঠাগার : শিশুদের, বড়দের, সকলের
২৫. পরিবাগের খালেদ চৌধুরী পাঠাগার : সৃষ্টিশীল মেলামেশার চারণভূমি
২৬. জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের মহানগর লাইব্রেরি: বাতি জ্বলে টিমটিম
২৭. কমরেড মণি সিংহ-ফরহাদ স্মৃতি পাঠাগার : আছে আবার নেই
২৮. মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর লাইব্রেরি : পড়ার মনোরম পরিবেশ
২৯. মালিবাগের নওয়াজেশ নলেজ সেন্টার : প্রকৃতির অনন্য পাঠাগার
৩০. আড়ম্বরহীন পিআইবি গ্রন্থাগার
৩১. রামকৃষ্ণ মিশন পাঠাগার : দ্বার খোলার আগেই হাজির পাঠক
৩২. রামমোহন রায় লাইব্রেরি ও পাঠগৃহ : ঢাকার প্রাচীন পাঠাগার
৩৩. খিলগাঁওয়ের বেগম রোকেয়া স্মৃতি পাঠাগার : টানাটানির সংসার
৩৪. সত্যেন বোস পাঠাগার : ভিন্নধর্মী এক বিদ্যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
৩৫. মগবাজারের শহীদ আ. ওহাব স্মৃতি পাঠাগার : একবারই কেনা হয়েছিল বই
৩৬. খিলগাঁওয়ের শহীদ বাকী স্মৃতি পাঠাগার : ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারের স্বপ্ন
৩৭. নাখালপাড়ার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি পাঠাগার : যেখানে বড়রা ছোটদের গল্প শোনায়
৩৮. শহীদ রুমি স্মৃতি পাঠাগার : ওরা বই পড়ে, মেঝেতে বসে
৩৯. সূত্রাপুরের শহীদ স্মৃতি পাঠাগার : পরিসর ছোট, উৎসাহে বড়
৪০. সীমান্ত গ্রন্থাগার : গেন্ডারিয়ার আলোকশিখা
৪১. সোমেন তাজুল পাঠাগার : পুরোনো বই-দলিলের আধার
৪২. রূপনগরের সৃষ্টি পাঠোদ্যান : কেউ কি পাশে দাঁড়াবে?
৪৩. মুগদাপাড়ার সুরবিতান আদর্শ পাঠাগার : নতুন বই পেলে খুশি পাঠকেরা
৪৪. নারিন্দার তাজ উদ্দিন স্মৃতি পাঠাগার : নিচে জ্বলন্ত উনুন, ওপরে পাঠাগার
৪৫. জাতীয় গ্রন্থাগার নীতি ২০০১
৪৬. ঢাকার কিছু বেসরকারি, সরকারি ও প্রাতিষ্ঠানিক এবং সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত পাঠাগারের ঠিকানা।
তাই বলা যায়, বইটির সূচিপত্র পাঠেই প্রাথমিক ধারণা পাবেন পাঠক। তবে পাঠের যত গভীরে যাবেন; ততই মুগ্ধ, হতাশ, ক্ষুব্ধ, আশাহত কিংবা আশান্বিত হবেন।
বইয়ের পাতায় পাঠাগারগুলো পরিদর্শনের আগে পাঠক জানতে পারবেন বাংলাদেশে পাঠাগারের ইতিহাস ও ঢাকার পাঠাগারচর্চা সম্পর্কে। এ প্রসঙ্গে লেখক বলেন, ‘‘ঢাকা মহানগরের সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী পাঠাগারের নাম ‘ফরাশগঞ্জের নর্থব্রুক হল পাবলিক লাব্রেরি’। ১৮৭২-৭৬ সালের মধ্যে এই পাঠাগারের প্রতিষ্ঠা। সদরঘাটের পাশে ১ ফরাশগঞ্জ এই ঠিকানায় পাঠাগারটি অবস্থিত। বর্তমানে এটি পরিচিত লালকুঠি হিসেবে। (ঢাকার গণপাঠাগার: আলোয় ভরা ভুবন, পৃষ্ঠা ২৯)
সে যা-ই হোক না কেন, রাজধানীর বুকে এই যে এতগুলো গণপাঠাগার আছে, এই বই না পড়লে তা হয়তো জানাই হতো না। তাছাড়া বইটি পাঠ করে আমার কিছু উপলব্ধি হয়েছে। তা হলো:
পাঠাগার যেন শুধুই পাঠাগার না হয়।
পাঠাগার কেন মানুষের পৃষ্ঠপোষকতা পায় না?
পাঠাগার হয়ে উঠুক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও।
পাড়া-মহল্লার মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠুক।
বইপড়ার পাশাপাশি সংস্কৃতিচর্চার
ব্যবস্থাও থাকতে পারে।
আমার উপলব্ধিগুলো জাগ্রত করার জন্য বইটি প্রশংসার দাবিদার। আশা করি, বইটি পড়া শেষে সব পাঠকের মনেই এমন উপলব্ধি জাগ্রত হবে।
কেননা বইটি পাঠ করে জানতে পেরেছি পাঠাগারগুলোর প্রতিষ্ঠার ইতিহাস, বই সংগ্রহের গল্প, টিকে থাকার লড়াইয়ের কথা। জানতে পেরেছি ব্যর্থতা ও সফলতার গল্পও। একেকটি পাঠাগার যেন একেকটি ইতিহাস। একেক জন উদ্যমী মানুষ কী ত্যাগ স্বীকারই না করেছেন একেকটি পাঠাগার গড়তে গিয়ে। পাঠাগার গড়তে গিয়ে তারা কেবল আশার আলো দেখেছেন, এখনো দেখে যাচ্ছেন, ভবিষ্যতেও দেখবেন। এই আশাবাদী মানুষগুলো সত্যিই আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস, অন্তহীন আলোর ঠিকানা।
লেখক কখনো কখনো গল্পের মতো করে বলে গেছেন। এই গল্পগুলোই আমার কাছে জীবনের শ্রেষ্ঠ গল্প মনে হয়েছে। বিষয়টি এমনভাবে বলা ঠিক হবে কি-না জানি না; তারপরও বলবো, ‘কেউ বই বেচে মদ খায়, আবার কেউ মদ বেচে বই কেনে’। তারা মূলত আঁধারের ভেতর থেকে আলো বের করে আনার চেষ্টা করেছেন। প্রত্যেক উদ্যোক্তা কী অপরিসীম ধৈর্য, সাহস আর সদিচ্ছার পরিচয় দিয়েছেন। তা কল্পনা করলেও আমাদের গা শিউরে উঠবে। যে কারণে আমরা একে পাঠাগার আন্দোলন বলি। আমরা জানি, যে কোনো আন্দোলনই খুব সহজ নয়। চাইলেই বিপ্লব সংঘটিত হয়ে যায় না। প্রতিটি আন্দোলন বা বিপ্লবের পেছনে যারা আঠার মতো লেগে থাকেন, প্রত্যয়দীপ্ত মননে এগিয়ে যান, তারাই হয়তো একদিন সফল হন। ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেন। জাতির ভেতরে জ্ঞান বিতরণের এই আন্দোলনকে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে সমর্থন জানাই। সারাজীবন সমর্থন জানিয়ে যাবো। পাশে থাকারও চেষ্টা করছি এবং করবো। আমার ভেতরে সেই বোধটি লেখক জাগ্রত করতে পেরেছেন।
তাই লেখকের কাছে আমার কিছু প্রস্তাবনাও থাকতে পারে। যদি সেগুলো আমলযোগ্য হয়। যদিও কাজগুলো সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হতে পারে। তারপরও একটি দল বা গোষ্ঠী তৈরি করে কাজগুলো করা যেতে পারে। যেমন:
জেলাভিত্তিক পাঠাগারের খোঁজ-খবর নেওয়া
বিভাগীয় শহরের পাঠাগারের অবস্থা জানা
ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারের অগ্রগতি জানা
উন্মুক্ত এবং সেলুন পাঠাগার নিয়ে কাজ করা।
তাহলে সারাদেশের পাঠাগার সম্পর্কে পাঠক একটি স্বচ্ছ ধারণা পেতে পারে। এমন প্রস্তাবনার মাধ্যমে কোনো স্বেচ্ছসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েও কাজগুলো করা যায়। যদিও কাজগুলো লেখকের একার দায়িত্ব বা কর্তব্য নয়। তবুও তিনি যেহেতু আমাদের ঢাকার গণপাঠাগার সম্পর্কে জানালেন, তাই তার কাছে এই আব্দার করে রাখলাম। তিনি ধারাবাহিকভাবে আমাদের আরও সমৃদ্ধ করবেন।
তবে দ্ব্যর্থহীনভাবে এ কথা বলতে পারি, বইটি পাঠে আমি যেমন উপকৃত হয়েছি, অন্যরাও তেমন উপকৃত হবেন। শুধু পাঠই শেষ কথা নয়, বইটি সংগ্রহের আগ্রহও বহুগুণে বাড়িয়ে তুলবে। কারণ বইয়ের শেষদিকে ঢাকার শতাধিক পাঠাগারের তালিকাটি পাঠককে সমৃদ্ধ করবে। এছাড়া কিছু আলোকচিত্র বইটির শ্রীবৃদ্ধি করতে সাহায্য করেছে। তাই বলা যায়, বইপ্রেমী বা পাঠাগ্রহী সবাই বইটি সংগ্রহে রাখতে চাইবেন বলে আমার বিশ্বাস।
সবশেষে লেখকের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমিও বলব, এই বই পাঠের মধ্যদিয়ে আবার জেগে উঠুক ঢাকার গণপাঠাগার। পড়াশোনার চর্চা ফিরে আসুক সবার মাঝে। ব্যস্ততম ঢাকা হোক লেখাপড়ার নগরী। হয়ে উঠুক আমাদের জ্ঞানচর্চার রাজধানী। জ্ঞানের রাজধানী। আমি বইটির বহুল পাঠ ও প্রচার-প্রসার কামনা করছি।
বই: ঢাকার গণপাঠাগার : আলোয় ভরা ভুবন
লেখক: কাজী আলিম-উজ-জামান
প্রকাশক: শ্রাবণ প্রকাশনী
প্রচ্ছদ: অশোক কর্মকার
প্রকাশকাল: ২০২০
পৃষ্ঠা: ২৬৪
মুদ্রিত মূল্য: ৬০০ টাকা
1 Comments
দারুণ তথ্যবহুল লেখা
ReplyDelete