Advertisement

উন্মেষ

ধারাবাহিক উপন্যাস : অপ্রণয় ( চতুর্থ পর্ব ) - অরুণ কুমার বিশ্বাস

                                                                                 (৪)

 সত্যি বলতে, এসব দেখেশুনে ডিটেকটিভ অলোকের বিয়ে করার ইচ্ছেটাই যেন ক্রমশ মরে যাচ্ছে। স্ত্রীগণ এমন হন! উরে ব্বাস! কী ভীষণ খেপচুরিয়াস! স্ত্রী তো নয়, যেন প্লাগড-ইন ইলেক্ট্রিক ইস্ত্রি।  
     সেই একই প্রশ্ন আবার করলো ওসি কামরান। লোকটার ধৈর্য আছে বলতে হবে। মনে করে বলুন ম্যাডাম, আপনার স্কুলে বা অন্য কোথাও কারো সাথে তক্কাতক্কি হয়েছে কি? মনে করে বলুন প্লিজ।
  এবার একটু সময় নেন রুবিনা। সবসময় মাথা গরম করলে চলে না। ছেলের খুনি ধরা পড়ুক তিনি নিশ্চয়ই চান।
   উসখুস করেন রুবিনা। কিছু একটা বলতে গিয়েও চেপে যান তিনি। মানে বলবেন কিনা ভাবছেন হয়তো। যে যাই বলুক, পুলিশকে চট করে জনগণের বন্ধু ভাবা বা ভাবানো অত সহজ নয়। লোকলজ্জার বিষয়ও থাকে।
রুবিনার শরীরী ভাষা কিছু একটা নির্দেশ করে। ডিটেকটিভ অলোকেশ ওসি সাহেবকে ইশারায় কী যেন বললেন।
     ওসি কবির সায় দিতেই অলোক বললেন, আচ্ছা, রুবিনার সাথে আমি কি একটু আলাদাভাবে কথা বলতে পারি? ডোন্ট ওয়রি অফিসার, চাইলে আপনি একজন লেডি কনস্টেবল সাথে রাখতে পারেন। আমি তাকে কিছু কথা জিজ্ঞেস করতে চাই।
     কেন নয়! নিশ্চয়ই। কামরান কবির মাথা নেড়ে সায় দেয়।
পাশেই এন্টিরুম। সুপরিসর না হলেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উত্তম জায়গা। আচ্ছা রুবিনা, বুঝতে পারছি আপনি কিছু গোপন করছেন। সেই গোপন কথাটা কী শুনি!
    তখনও গা মোচড়ান রুবিনা। ক্রমশ ধৈর্য হারাচ্ছেন ডিটেকটিভ অলোকেশ। তিনি গলায় ঝাঁজ মিশিয়ে বললেন, ভুলে যাবে না এটা খুনের কেস। আপনার অসহযোগিতা কেসটাকে আরো জটিল করে তুলেছে মিসেস রুবিনা। মন খুলে বলুন কী হয়েছিল!
     এবার কিন্তু মুখ খুললেন রুবিনা।  তিনি যা বললেন তার মর্মার্থ এই- দিন বিশেক আগে তার স্কুলে একটা ঘটনা ঘটেছিল। আর সেই ঘটনার সূত্রপাত কিন্তু রুবিনার মাধ্যমেই হয়েছিল।
   কী সেই ঘটনা? উৎসুক হয়ে ওঠেন ডিটেকটিভ অলোকেশ। প্লিজ বলুন। রেখেঢেকে না রেখে খুলে বলুন রুবিনা। জানেন তো, সবখানে রাখঢাক ভালো নয়। গরম খাবার ঢেকে রাখলে নষ্ট হয়। তেমনি গরম খবরও ঢাকতে নেই।  
কিছু একটা ইঙ্গিত করলেন ডিটেকটিভ অলোকেশ। কীসের ইঙ্গিত কে জানে! পাশে দাঁড়ানো লেডি কনস্টেবল রেহনুমার তা বোধগম্য হল না।   
   অমনি বোতলের ছিপি খুলে দেন রুবিনা। সেদিন স্কুলের ওয়াশরুমে গিয়ে তিনি এক আপত্তিকর দৃশ্য দেখতে পান। তার স্কুলের এক পুরুষ সহকর্মী আরেক নারী সহকর্মীকে জড়িয়ে ধরে....!       
   অন্য সময় হলে হেসে ফেলতেন ডিটেকটিভ অলোকেশ। হয়তো চটুল হেসে বলতেন জড়াজড়ি মন্দ নয়, কী বলেন! এতে উষ্ণতা বিনিময় হয়, পারস্পরিক ভাবভালবাসা বাড়ে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। রুবিনার দেখা সেই আপত্তিকর দৃশ্য থেকেই হয়তো বিপত্তির শুরু।
     তারপর! তারপর কী হল বলুন রুবিনা।
    আমাকে ওরা দেখে ফেলেছিল। আমার সাথে ওদের চোখাচোখি হল। আমি পেছনে সরে এলাম। দৃশ্যটা এতই পরিষ্কার যে ওরা অস্বীকার করতে পারেনি।
    তাদের পরিচয় জানতে পারি? চোখ নাচান ডিটেকটিভ অলোকেশ।
    ম্যাথসের টিচার লতিফ জোয়ার্দার আর হৃদি মিস। হৃদি মিস জুনিয়র ক্লাসে সমাজবিজ্ঞান পড়ান।
মনে মনে হাসলেন অলোকেশ। সমাজবিজ্ঞানের টিচারের এই হাল হলে পোলাপান তার কাছ থেকে কী শিখবে! বলিহারি যাই অংকের টিচারকেও। ব্যাটা লতিফ তুমি এটুকু বুঝবে না যে স্কুল কম্পাউন্ডে ওপেন ওয়াশরুমে দাঁড়িয়ে উষ্ণতা বিনিময় করা যায় না। এ তোমার কেমন হিসাব-নিকাশ বলো!  
    তারপর বলুন পানি কদ্দুর গড়ালো! তাড়া দেন ডিটেকটিভ অলোকেশ।  
   দাঁত দিয়ে নিচের ঠোঁট কামড়ে রুবিনা বললেন, আমি একটু ভুল করে ফেলেছিলাম স্যার। মানে বোকামি।
 কী বোকামি শুনি! অলোকের কৌতূহলের মাত্রা থার্মোমিটারের পারদের মতো উত্তরোত্তর বাড়তেই থাকে। তিনি এখানে প্রচুর মালমসলার গন্ধ পান। সরেস ব্যাপার বটে!  
    একটু ভেবে নিয়ে লজ্জা লজ্জা মুখে রুবিনা বললেন, লতিফ জোয়ার্দার আমাকে কেসটা গোপন রাখতে বলেছিল স্যার। ঘুষ সেধেছিল।
  কেসটা অলোকের ঠিক হজম হয় না। দুচোখে বিস্ময় মেখে বললেন, ঘুষ! প্রেম ঢাকতে ঘুষ? কেন বলুন তো, ওরা কি অবিবাহিত নয়! আই মিন প্রেম সে তো ওরা করতেই পারে। শুধু স্কুল কম্পাউন্ডে না হলেই হত।
    উঁহু। ওরা দুজনেই বিবাহিত। বাচ্চাও আছে। রুবিনা বললেন। আমি ওদের কথা প্রিন্সিপাল ম্যামকে বলে দিয়েছি। না বললেও অবশ্য দোষের কিছু ছিল না। ওরা বুঝতে পারেনি যে ওয়াশরুমের বাইরের দিকটাতে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল। ভিতরে নয়, বাইরে। সেখানে ওরা কী করছিল তা দেখা না গেলেও পরপর দুজন যে একই দিকে ঢুকেছিল, তা বেশ বোঝা যায়।
রুবিনা বললেন। এসব যখন তিনি বলছিলেন, তাকে বেশ সপ্রতিভ দেখাচ্ছিল। যেন ছেলে হারানোর শোক অনেকটাই তিনি ভুলতে পেরেছেন।  
হুম! বুঝলাম। তার মানে আপনার কারণে অংকের শিক্ষক লতিফ সাহেব আর হৃদি মিস বেশ একটু বেকায়দায় পড়েছিল, তাই তো!
শুধু বেকায়দা! ম্যাম ওদের স্কুল থেকে বের করে দেবার হুমকি দিয়েছিলেন। রুবিনা এমনভাবে বললেন যেন তিনি রাজ্য জয় করে বসে আছেন। মহিলা একটু মাথামোটা, মানতে বাধ্য হন ডিটেকটিভ অলোকেশ।  
      ওরা আপনাকে কিছু বলেনি? মানে হুমকিটুমকি বা বকাঝকা?
রুবিনা চুপ। এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি কিছু বললেন না।
  কী হল, বলুন? আপনি ওদের নামে প্রিন্সিপালের কাছে নালিশ করলেন! ওরা আপনাকে এমনি এমনি ছেড়ে দেবে তা তো হতে পারে না। অলোক আগবাড়িয়ে বললেন।
কিন্তু আমি কী এমন খারাপ কাজ করেছি বলুন! ওরা এসব করতে পারবে, আর আমি বলতেও পারবো না! নাক টানেন রুবিনা। সেটা ছেলে হারানোর কষ্টে, নাকি কারণটা কিছু অন্য ঠিক বোঝা গেল না।
     অলোকের মেলা চাপাচাপিতে রুবিনা শেষে বললেন যে, ঘটনার দিন কয়েক বাদে হৃদি মিস নাকি বলেছিল রুবিনাকে সে দেখে নেবে। কাজটা সে মোটেও ভাল করেনি। এর ফল তাকে পেতেই হবে।     
   ব্যস, মিটে গেল। রূপম খুনের জবরদস্ত একটা মোটিভ পাওয়া গেল। মায়ের উপর প্রতিশোধ নিতে মাসুম বাচ্চা খুন! কিন্তু আদতে কেসটা তত সহজ ছিল না। বস্তুত, পর্দার আড়ালেরও আড়াল থাকে। রহস্যের পেছনে রহস্য। সেটাই এবার খুঁজে দেখার অপেক্ষা। অলোকেশ ঘামছেন। সুপারসনিক স্পিডে তার মগজ ঘুরছে।   

    রুবিনা-ফজলু দম্পতিকে টা-টা গুডবাই বলে ওসির চেম্বারে বসলেন ডিটেকটিভ অলোকেশ। ফুটো দিয়ে রিপোর্টার শুভজিত রুবিনার বক্তব্য সবই শুনেছে। যদিও অলোকের বিবেচনায় কাজটা মোটেও ঠিক হয়নি। বলা হল রুবিনার সাথে তার ক্লোজড-ডোর বৈঠক, অথচ পার্টিশনে ফুটো।
     আর সেখান দিয়ে শুভ আর ওসি কামরান ওদের কথা লুকিয়ে শুনেছে। এর নাম ওয়াটার গেট কেলেঙ্কারি, যে কারণে প্রেসিডেন্ট নিক্সনের চাকরি থুক্কু রাষ্ট্রপতিগিরি ছুটে গিয়েছিল।    
     কী বুঝলেন ডিটেকটিভ সাহেব? একপ্রস্থ কফির অর্ডার দিয়ে তারপর বলল ওসি কবির। এসআই খগেন মিত্র ওদের কথা মনোযোগ দিয়ে গিলছে। এই কেসে খগেন জব্বর মজা পাচ্ছে। সে আসলে ডিটেকটিভ গপ্পের বেজায় ভক্ত। পোকা বলতে পারেন।  
    কীসের কী বুঝলাম?
  ওই যে, রুবিনার গোয়েন্দাগিরি। কলিগদের উপর।
  ওহ্ হো। সে তো আপনিও শুনেছেন। তীর্যক হেসে অলোকেশ বললেন।
    আমি! কীভাবে? বিস্মিত ওসি কামরান।
 ওই যে পার্টিশনের গায়ে ফুটো দিয়ে।
    অমনি চমকে যায় ওসি কামরান। আপনি কী করে জানলেন মিস্টার ডিটেকটিভ?
 আলোকেশ আলতো হেসে বললেন, কী করে বুঝলাম! আপনার আর আমার সহকারী বন্ধু শুভজিতের মুখভঙ্গি দেখে। রুবিনা যখন বেরিয়ে যায়, তখন আপনারা দুজনেই একরকম হাসি উপহার দিলেন। বোঝাতে চাইলেন যে ভদ্রমহিলা সত্যিই একটা বেকুব। নইলে কলিগদের প্রণয়দৃশ্য কেউ প্রিন্সিপালের কানে তোলে!  
বাহ বা! আপনাকে স্যালুট ডিটেকটিভ অলোকেশ । সত্যিই আপনি একটা জিনিয়াস। নইলে শুধু হাসি দেখেই  ধরে ফেললেন যে আমরা রুবিনার কথা লুকিয়ে শুনেছি! রিয়েলি মগজ আছে আপনার!  
    সে তো আপনারও আছে, কিন্তু খুব একটা খাটান না। রিমান্ডে নিয়ে অকারণ হাত-পা চালান। মুখের উপর বলে দেন ডিটেকটিভ অলোকেশ।
এই কথার উত্তরে কবির কিছু বলল না। সত্যিটা সব সময় মিথ্যার খোলসে ঢাকা যায় না। মনে না নিলেও মেনে নিতে হয়। আর সত্যিকথা বরাবরই একটু তেতো হয়।
     আমি ভাবছি অন্য কথা। ডিটেকটিভ অলোকেশ বললেন।
    কী কথা?
 ওই যে কাঁটা। মাথা নাড়লেন অলোকেশ। ওটা আসলে কী হতে পারে! কীসের কাঁটা? ধাতব নাকি গাছের কাঁটা!
মাছেরও কাঁটা আছে কিন্তু। মাঝখান থেকে ফুট কাটলো ক্রাইমগল্প লিখিয়ে শুভজিত।
বলছে তোকে! মাছের কাঁটা দিয়ে ঘাড়ে ক্ষত! হয় নাকি আবার! এক ফুৎকারে উড়িয়ে দেন অলোকেশ। এই কেসে একজন নারীর সংশ্লেষ থাকার সম্ভাবনা খুব প্রবল। এই অব্দি বলে উঠে পড়লেন তিনি। ওসি কবিরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আপনি বরং রুবিনার সহকর্মী অংকের মাস্টার লতিফ আর হৃদিকে তুলে আনুন। অল্পস্বল্প ডোজেই কাজ হবে মনে হয়। তবে আমরা কিন্তু নিশ্চিত নই যে তারাই খুনি।
হুম। আর কিছু?
না, আপাতত আর নেই। তবে কি জানেন, এই কেসে সবচে বড় দুর্বলতা হল মোটিভ খুঁজে পেলেও মোডাস অপারেন্ডি মানে খুনের হাতিয়ার কিছু পাওয়া যায়নি। যাবে কি করে! খুনি বা খুনিরা তো কোনো অস্ত্র দিয়ে খুনটা করেনি। হাতেই কাজ সেরেছে। ভেরি চালাক খুনি, বুঝলেন!
ম্যান অফ পার্টস, কী বলেন? হাতের কাজে বেশ পাকা। মজা করে বলল ওসি কামরান কবির। ভদ্রলোকের রসবোধ আছে বলতে হবে।
    অযথা সময় নষ্ট না করে উত্তরা মডেল স্কুলের উদ্দেশ্যে সপারিষদ বেরিয়ে যায় ওসি কামরান কবির। তাদের উদ্দেশ্য অংকের টিচার লতিফ আর তার বিশেষ পছন্দের পাত্রী হৃদিকে তুলে আনা। এই দৃশ্যে ডিটেকটিভ অলোকেশের আপাতত কিছু করণীয় নেই। সাসপেক্টদের থানায় নিয়ে এসে উত্তমরূপে জেরা করবে ওসি সাহেব। ফলাফল কী হয় তা জানানোর কথা বলে বেরিয়ে এলেন অলোকেশ।
     স্মার্টফোনে উবার ডাকলেন। উবার সাথে সাথে সাড়া দেয়। আশেপাশেই ছিল বোধ হয়। ঝটপট উঠে পড়ে অলোকেশ বললেন, চলো যাই।
সাথে সহকারী শুভ আছে। একটা কথা সে বারবার আওড়ায়। কাঁটা! রূপমের মৃত্যুর পেছনে কাঁটার কী ভূমিকা থাকতে পারে সে বোঝে না।    
   ইয়েস, কাঁটা! অনুরণন করেন ডিটেকটিভ অলোকেশ। আই মিন স্পাইক, স্পাইন বা প্রিকল। চুলের কাঁটা নয়তো! হেয়ার পিন। বা নাকের! আনমনে বললেন অলোকেশ।
    ইকবাল রোডের বাসায় ফিরে অলোক দেখলেন তার জন্য অপেক্ষমাণ উর্বী রেগে কাঁই। রাগের কারণ কী!
  কী আবার! বারবার ফোন করেও তোমাকে পাচ্ছি না। টেনশন হয় তো, নাকি! উর্বী নাক টানে। রেগে গেলে বা কান্না কান্না ভাব হলে উর্বীকে দেখতে দুর্দান্ত লাগে। মুখে তা বললেনও ডিটেকটিভ অলোকেশ।
হুঁ। তা তো লাগবেই। ইউ আর অ্যা স্যাডিস্ট, ইউ নো। অন্যের কষ্টে তোমার খুশি লাগে। বুকের ভিতর সুখের সুনামি বয়ে যায়। ধেই ধেই করে নাচতে ইচ্ছে করে!
বারবার ফোন করেছে উর্বী! কই, অলোক তো টের পাননি! পকেট থেকে ফোন টেনে বের করলেন। এতক্ষণে তার খেয়াল হল চাপ লেগে ফোনটা বন্ধ হয়ে গেছে। নাকি ব্যাটারি নেই!  
  ওহ সরি! আই’ম রিয়েলি সরি। অলোক বললেন। নিজের বোকামির দায় তিনি নিজেই নিলেন। বস্তুত, ভুল করে মাফ চাইবার মাঝে লজ্জার কিছু নেই।
   কফি আর ফ্রেঞ্চ টোস্ট বানিয়ে নিয়ে এসে ওরা দুজনে জমিয়ে বসলো। শুভ পথেই নেমে গেছে। তার একটা জরুরি মিটিং আছে। কাভার করতে হবে।
    কফিতে গলা ভিজিয়ে উর্বী বলল, কোথায় গিয়েছিলে বলো তো? কী এমন জরুরি কাজ?
আছে তো। কাজ। ছোট্ট করে বললেন ডিটেকটিভ অলোকেশ। বেশ জরুরি।
  সেটা কী! বলো, আমি শুনতে চাই।
   ঘেঁটে যাওয়া প্রেম। আই মিন পরকীয়া। চটে যাওয়া ঘুমের মতো, কিছুতেই আর আসে না। এক থেকে একশ পর্যন্ত উল্টো গোনো, লাভ নেই। কঠিন কঠিন সব শব্দজট মেলাও, তাতেও নিদ্রাদেবী প্রসন্ন হবেন না।    
    উষ্মা প্রকাশ করে উর্বী বলল, উঁহু! প্রেম সে তো প্রেমই। পরকীয়া শব্দটা বাজে শোনায়। ঘেঁটে গেছে মানে! কীভাবে?
  এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে অলোকে বললেন, আচ্ছা উর্বী, একটু মাথা খাটিয়ে বলো তো চুলের কাঁটা দিয়ে কি কাউকে খুন করা সম্ভব!
   খুন! কাকে? চুলের কাঁটা দিয়ে কেন! পিস্তল বা ছুরি-চাকু নেই! গলায় দড়ি পেঁচিয়েও তো খুন করা যায়। বেণী-দুলুনি বাচ্চা মেয়ের মতো বলল উর্বী।  
    আহা হা! আমি যা বলছি তার উত্তর দাও। উত্তরায় একটা ছেলে খুন হয়েছে। বাচ্চা ছেলে। এগারো বছর বয়স। ঘেঁটে যাওয়া প্রেমের কারণে ছেলেটা খুন হয়ে থাকতে পারে।
মানে কী! দয়া করে একটু খুলে বলবে! বিরক্ত উর্বী। আবার কৌতূহলীও। 

চলবে...

Post a Comment

0 Comments